Cosmology vs Neuron
وَ هُوَ الَّذِیۡ یَتَوَفّٰىکُمۡ بِالَّیۡلِ وَ یَعۡلَمُ مَا جَرَحۡتُمۡ بِالنَّهَارِ ثُمَّ یَبۡعَثُکُمۡ فِیۡهِ لِیُقۡضٰۤی اَجَلٌ مُّسَمًّی ۚ ثُمَّ اِلَیۡهِ مَرۡجِعُکُمۡ ثُمَّ یُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۶۰﴾
আর তিনিই রাতে তোমাদেরকে মৃত্যু দেন এবং দিনে তোমরা যা কামাই কর তিনি তা জানেন। তারপর তিনি তোমাদেরকে দিনে পুনরায় জাগিয়ে তুলেন, যাতে নির্দিষ্ট মেয়াদ পূর্ণ করা হয়। তারপর তাঁর দিকেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। তারপর তোমরা যা করতে তিনি তোমাদেরকে সে বিষয়ে অবহিত করবেন। (সূরাহ আনআম, আয়াতঃ ৬০) আল-বায়ান
ঘুম মৃত্যুর রিহার্সাল
اَللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا
উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনারই নামে মরে যাই আবার আপনারই নামে জীবন লাভ করি।’
আর যখন (ঘুম থেকে) সজাগ হতেন, তখন বলতেন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ
উচ্চারণ- ‘আলহামদু লিল্লাহিল লাজি আহইয়ানা বা’দা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর।’
অর্থ : ‘সব প্রশংসা ওই আল্লাহর জন্য, যিনি মৃত্যুর পর আমাদের জীবন দান করেছেন এবং তার দিকেই আমাদের পুনরুত্থান।’
নিউরনের জাল বনাম মহাবিশ্ব
আমাদের মস্তিষ্কের মোট ভরের ৮০ শতাংশ হলো গ্রে ম্যাটার। এই গ্রে ম্যাটারে আছে প্রায় ৬০০ কোটি নিউরন এবং ৯০০ কোটি অন্যান্য কোষ। মস্তিষ্কের সেরিবিলামে (cerebellum) আছে প্রায় ৭ হাজার কোটি নিউরন এবং প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি অন্যান্য কোষ। মানুষের মস্তিষ্কের মোট নিউরনের সংখ্যা মহাবিশ্বের মোট গ্যালাক্সির সংখ্যার প্রায় সমান।
নিউরনগুলো মস্তিষ্কে জোটবদ্ধ হয়ে পরস্পরের মধ্যে স্নায়বিক সংযোগের মাধ্যমে তৈরি করে জটিল নিউরাল নেটওয়ার্ক। একইভাবে মহাবিশ্বের গ্যালাক্সিগুলোর মধ্যে মাধ্যাকর্ষণ এবং অন্যান্য জটিল প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় কসমিক নেটওয়ার্ক। যদিও কসমিক নেটওয়ার্ক নিউরাল নেটওয়ার্কের তুলনায় বিলিয়ন বিলিয়ন বিলিয়ন (১০২৭) বা ১০ লাখ কোটি কোটি কোটি গুণ বড়। নিউরাল নেটওয়ার্ক ও কসমিক নেটওয়ার্কের মধ্যে আছে আশ্চর্য দৃশ্যমান সাদৃশ্য।
ছবি ১-এর বাঁ পাশে দেখা যাচ্ছে, কম্পিউটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে তৈরি মহাবিশ্বের একটি বাস্তব নমুনা। ১০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরত্বের ভেতর কসমিক নেটওয়ার্কের যতটুকু দেখা যায়, তা দেখা যাচ্ছে এই ছবিতে। ডান পাশের ছবিটি হলো মস্তিষ্কের সেরিবিলামের ৪ মাইক্রোমিটার পুরু একটি স্লাইসের আণুবীক্ষণিক চিত্র।
দৃশ্যত, একই আকারের দুটি চিত্রের পাওয়ার স্পেকট্রাম অ্যানালাইসিস করে দেখা গেছে, এই দুটি নেটওয়ার্কের গঠনবিজ্ঞান প্রায় কাছাকাছি। কসমিক নেটওয়ার্কে পাওয়া গেছে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার ৭০০ নোড বা সংযোগস্থল। প্রতিটি সংযোগস্থলে গড়ে ৩ দশমিক ৮ থেকে ৪ দশমিক ১টি সংযোগ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে নিউরাল নেটওয়ার্কে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার নোড পাওয়া গেছে। প্রতিটি নোডে আছে ৪ দশমিক ৬ থেকে ৫ দশমিক ৪ স্নায়বিক সংযোগ।
মস্তিষ্কের উপাদানের ৭৭-৭৮ শতাংশ পানি,
১০-১২ শতাংশ লিপিড, ৮ শতাংশ প্রোটিন, ১ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট, ২ শতাংশ অন্যান্য
জৈব যৌগ, লবণ ১ শতাংশ। পানি স্নায়বিক সংযোগে কোনো ভূমিকা রাখে না। দেখা যাচ্ছে,
মস্তিষ্কের মোট ভরের ৭৭ থেকে ৭৮ শতাংশ কোনো ধরনের স্নায়বিক সংযোগে অংশ নেয় না।
এদিকে মহাবিশ্বের মোট শক্তির প্রায় ৭৫ শতাংশ অদৃশ্য শক্তি বা ডার্ক এনার্জি। কসমিক নেটওয়ার্কে এই অদৃশ্য শক্তির সরাসরি কোনো ভূমিকা আমরা এখনো দেখতে পাই না। দেখা যাচ্ছে, নিউরাল ও কসমিক উভয় নেটওয়ার্কেই প্রায় ৭৫ শতাংশ উপাদানের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ নেই।
কসমিক নেটওয়ার্কের উদ্ভব কীভাবে হয়েছে, তা সঠিকভাবে খুঁজে বের করা খুব সহজ কাজ নয় বলেই বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না ঠিক কীভাবে কী হয়েছে। কারণ, কম্পিউটারে মহাবিশ্বের একটি সার্থক মডেল তৈরি করতে ১ থেকে ১০ পেটাবাইট (১ পেটাবাইট = ১০২৪ টেরাবাইট) ডেটা দরকার। আর এত বিপুল পরিমাণ ডেটা বিশ্লেষণ করার জন্য দরকার সুপারকম্পিউটার।
পুরো মহাবিশ্বের নেটওয়ার্কে যত তথ্য আছে, তার সব তথ্য ধরে রাখার মতো ক্ষমতা আমাদের মস্তিষ্কের নিউরনে আছে। এই ক্ষমতাকে কাজে লাগানোর জন্য দরকার নিয়মিত মাথা খাটানো। অর্থাৎ মগজের চর্চা। যে যত বেশি চর্চা করবে, তার নিউরাল নেটওয়ার্ক হবে ততই কার্যকর।
আমাদের মস্তিষ্কের সব নিউরনকে কাজে লাগালে
আমরা ২ দশমিক ৫ পেটাবাইট ডেটা আমাদের মাথার মধ্যে রাখতে পারব। আমরা আমাদের
মস্তিষ্ককে যত বেশি খাটাব, মস্তিষ্কের নিউরাল নেটওয়ার্ক তত বেশি শক্তিশালী হবে, তত
বেশি জটিল সমস্যার সমাধান আমরা করতে পারব।

Comments
Post a Comment